মহাশূন্যে তারাদের জন্মরহস্য ! মহাশূন্যের গহীনে . ১ম পর্ব

0

⭐ তারা কী? – প্রথম পর্ব 

তারা হলো মহাবিশ্বের এক অনন্য সৃষ্টি, যা নিজস্ব আলো ও তাপ উৎপন্ন করে আকাশের দিকে তাকালে অসংখ্য তারার ঝলমলে আলো আমাদের দৃষ্টি কাড়ে। কিন্তু আসলে তারা কীভাবে তৈরি হয়? কেন তারা জ্বলে? এবং তারা কী উপাদান দিয়ে গঠিত? আসুন, আজ আমরা এই রহস্যময় মহাজাগতিক বস্তু নিয়ে জানি।

🔭 তারা কীভাবে তৈরি হয়?

তারা মূলত হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাসের বিশাল মেঘ থেকে গঠিত হয়। এই মেঘকে "নেবুলা" বলা হয়। মহাবিশ্বের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে থাকা এই গ্যাস ও ধূলিকণা যখন অভিকর্ষ বলের কারণে সংকুচিত হতে থাকে, তখন একসময় এর কেন্দ্র এতটাই গরম হয়ে যায় যে পরমাণুগুলো সংঘর্ষে ফিউশন প্রতিক্রিয়া শুরু করে। (ফিউশন প্রতিক্রিয়া হলো: দুটি হালকা পরমাণু একত্রিত হয়ে একটি ভারী পরমাণু তৈরি হয় , ফলে দুটি হালকা পরমাণু একত্রিত হয়ে যেখানে প্রচুর শক্তি উৎপন্ন হয়। এই ফিউশন প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে হাইড্রোজেন গ্যাস হিলিয়ামে রূপান্তরিত হয়, এবং প্রচুর পরিমাণে শক্তি নির্গত হয়। এই শক্তিই তারাকে উজ্জ্বল করে তোলে, আর আমরা সেই আলো দেখতে পাই।

🚀 সংক্ষেপে, ফিউশনই তারাদের শক্তির উৎস!

☀ তারার গঠন
একটি সাধারণ তারার তিনটি প্রধান অংশ থাকে:

1. কেন্দ্রস্থল (Core):

এখানে তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি (প্রায় ১০-১৫ মিলিয়ন ডিগ্রি সেলসিয়াস)।
পারমাণবিক সংযোজন অর্থাৎ কিছু হালকা পরমাণু একত্রিত হয়ে একটি ভারী/বড় পরমাণু তৈরি হওয়া (Nuclear Fusion) এখানেই ঘটে, যা তারাকে শক্তি সরবরাহ করে।

2. আলোকমণ্ডল (Photosphere):

এটি তারার দৃশ্যমান অংশ, যেখান থেকে আলো নির্গত হয়। সূর্যের ক্ষেত্রে এটি প্রায় ৫৫০০°C উষ্ণ।

3. বহিরাবরণ (Corona):

এটি তারার সবচেয়ে বাইরের স্তর, যেখানে তাপমাত্রা আরও বেশি হতে পারে।

🔥 তারা কেন জ্বলে?

তারা আসলে কোন আগুনের গোলা নয়! বরং, এটি পারমাণবিক বিক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন শক্তির কারণে উজ্জ্বল হয়ে থাকে। যখন তারার কেন্দ্রে হাইড্রোজেন পরমাণু একত্রিত হয়ে হিলিয়ামে পরিণত হয়, তখন প্রচুর তাপ ও আলো উৎপন্ন হয়।

এই শক্তি দুইভাবে নির্গত হয়:
✅ তাপ – যা তারার গায়ে প্রচণ্ড উত্তাপ সৃষ্টি করে।
✅ আলো – যা মহাশূন্যে ছড়িয়ে পড়ে এবং আমরা দূর থেকে তা দেখতে পাই।

🔍 মজার তথ্য

সূর্যও একটি তারা, যা আমাদের পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের নক্ষত্র।
রাতের আকাশে আমরা যে তারাগুলো দেখি, তাদের অনেকগুলোর আলো আসলে কয়েক শত বা হাজার বছর আগের! কারণ তারা এত দূরে যে তাদের আলো আমাদের চোখে পৌঁছাতে অনেক বছর লাগে।
কিছু তারা এতটাই বিশাল যে আমাদের সূর্য তাদের কাছে একটি ছোট বিন্দুর মতো মনে হবে! যেমন: বিটেলগিউজ ও অ্যান্ট্যারেস।


📌 সংক্ষেপে

তারা মহাবিশ্বের নিজস্ব আলো ও তাপ উৎপন্ন করা বিশাল গ্যাসীয় বস্তু।
তারা মূলত হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাস দিয়ে তৈরি।
পারমাণবিক সংযোজন (Nuclear Fusion) এর কারণে তারা আলো ও তাপ উৎপন্ন করে।
তারা জন্ম নেয় নেবুলা থেকে এবং কোটি কোটি বছর ধরে বেঁচে থাকে।


এতে আমরা জানবো— তারার রঙ, আকার, তাপমাত্রা ও বিভিন্ন ধরণের নক্ষত্র সম্পর্কে।



আরো পড়ুন...  







Post a Comment

0Comments

Thanks everyday

Post a Comment (0)
To Top